সেলিম উদ্দিন, ঈদগাঁও:
সারাদেশের ন্যায় প্রচন্ড শীত, সেই সাথে উত্তরের হিমেল হাওয়া ও ঘন কুয়াশা বাড়ছে শীতের তীব্রতা। শৈত্যপ্রবাহে বিপর্যস্থ হয়ে পড়েছে কক্সবাজার সদর উপজেলার ঈদগাঁওর জনজীবন। গত কয়েক দিনের কনকনে শীতে জবুথবু হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ। প্রতিদিনই কমছে তাপমাত্রা।

কক্সবাজার আবহাওয়া অধিদফতরের তথ্য মতে, এখন মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ চলছে। আরও কয়েকদিন এই অবস্থা থাকতে পারে। কেউ কেউ বলছে ৪০ বছর বছর পর এবার পৌষের মাঝামাঝিতে শৈত্য প্রবাহ শুরু হয়েছে। দিনে কোন রকম সূর্যের আলো দেখা গেলেও সূর্য ডোবার সাথে সাথে প্রচন্ড ঠান্ডা ও উত্তরে বাতাস বইতে শুরু করেছে। শীতের তীব্রতায় দিনের বেলাতে ঈদগাঁও বাজারের জনসমাগম যেমন কমে গেছে, তেমনি সন্ধ্যার পরপরই হাটবাজারগুলো একেবারেই ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। প্রচন্ড শীতের কারণে কেউ কেউ আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন।

এদিকে কনকনে ঠান্ডা বাতাস আর ঘন কুয়াশায় শীতের দাপট কমেনি। তীব্র শীতের কারণে মানুষের স্বাভাবিক কর্মকান্ড ব্যাহত হচ্ছে। অতি প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হচ্ছে না। খুব সকালে মাঠে প্রতিদিনের মতো চাষিদের দেখা মিলছে না। চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে দিন আনা দিন খাওয়া মানুষগুলোকে। হাড় কাঁপানো শীতে দুর্বিসহ হয়ে উঠেছে ছিন্নমূল ও নিম্ন আয়ের মানুষের জীবন। অন্যদিকে পাহাড়ি ও বস্তিবাসীরা মানবেতর জীবন-যাপন করছে। ইতিমধ্যে পুরাতন কাপড়ের দোকান (নিলামী টাল) প্রচুর ভিড় জমে উঠেছে। শীতের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পুরাতন কাপড়ের দোকানগুলোতে মানুষ হুমড়ি খেয়ে পড়ছে। দামও বেশি নিচ্ছে দোকানীরা। দুপুর থেকে ঈদগাঁও বাজারের সর্বত্রই উপচে পড়া ভিড় দেখা যায় শীতবস্ত্রের কাপড়ের দোকানগুলোতে।

সদরের পোকখালী ইউনিয়নের গোমাতলীর লবণ চাষীরা জানান, প্রতিদিন তারা ভোরে লবণ মাঠে যান। কিন্তু গত কয়েকদিনের প্রচন্ড শীতের কারণে বেলা ১২টার দিকে মাঠে যাচ্ছে তাতেও কাঁপন ধরছে।

সবচেয়ে দুর্ভোগে পড়েছে এলাকার শিশু শিক্ষার্থীরা। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও উপস্থিতির হার কমেছে। তীব্র শীতে শিশুরা নিউমোনিয়া, জ্বর, সর্দি ও কাশিসহ বিভিন্ন শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। ঈদগাঁ’র বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে শিশু রোগীর ভিড় বাড়ছে। শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় বৃদ্ধরাও বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। ফলে তারা মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। এসব রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিতে গিয়ে চিকিৎসকরা হিমশিম খেতে হচ্ছে বলে জানান জালালাবাদ ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র কর্মকর্তা।

সব মিলিয়ে সদর উপজেলার ৬টি ইউনিয়ন তথা ঈদগাঁও, পোকখালী, জালালাবাদ, ইসলামাবাদ, ইসলামপুর ইউনিয়নের হরেক রকমের পেশায় শ্রমজীবী মানুষ যারা প্রচন্ড ঠান্ডা ও শীতের কারনে ঘর থেকে বের হতে পারছেনা। ঠান্ডা শীত সেই সাথে কুয়াশার সংমিশ্রণে তাদের জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। শৈত্য প্রবাহের কারণে শীতে কাবু হয়ে পড়েছে গোটা জনপদ।